বছর জুড়ে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দারুণ প্রভাব ফেলেছে প্যানডেমিক করোনা। নিজেদের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ সঞ্চয় যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এই বিপরীত পরিস্থিতিতে তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতি ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতেও বাধ্য করেছে। সেই সূত্র ধরে একটি লাইফ ইনসিওরেন্স বা ঠিকঠাক কভারেজের স্বাস্থ্য বিমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু করোনাই (Coronavirus) নয়, পরিবারের কারও গুরুতর শারীরিক অবস্থাতেও কাজে দিতে পারে এই বিমা। কিন্তু কতটা ও কেমন হওয়া উচিৎ সংশ্লিষ্ট বিমার কভারেজ? আসুন জেনে নেওয়া যাক বিশদে!
এই বিষয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন ইনসার্টেক ব্রোকিং কোম্পানির প্রোবাস ইনসিওরেন্সের ডিরেক্টর রাকেশ গয়াল। তাঁর কথায়, কোনও স্বাস্থ্য বিমাকিনতে গিয়ে ইনসিওরেন্স কভারেজের বিষয়টিকে বিবেচনা করতে হবে গ্রাহকদের। অর্থাৎ একজন বিমা থেকে কতটা উপকৃত হচ্ছেন আর বিমার অধীনে কতটা প্রিমিয়াম জমা পড়েছে, এ নিয়ে সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিমা নির্বাচনের সময়ে নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনীতাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিমার মোট টাকার অঙ্কটাও ভালো করে কষে নিতে হবে। যদি পরিবারে কোনও অসুস্থ বর্ষীয়ান সদস্য থাকেন, তা হলে তাঁর কথা আগে ভেবে দেখতে হবে। নিজের ও পরিবারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখেই বিমার টাকা ও পলিসি নির্বাচন করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে, একটি পুরো পরিবারের ক্ষেত্রে মাত্র ৫-৭ লক্ষ টাকার বিমা কখনও পর্যাপ্ত নয়।
এগুলির পাশাপাশি বিমা করার পর সাব লিমিট, কো পেমেন্ট, ক্লেইম সেটেলমেন্ট রেশিও, প্রিমিয়াম লোডিং-সহ একাধিক বিষয়েও নজর দিতে হবে।
HDFC ERGO জেনেরাল ইনসিওরেন্স কোম্পানির বিবৃতি অনুযায়ী, বার্ষিক আয়ের অন্তত ৫০ শতাংশ হওয়া উচিৎ হেল্থ ইনসিওরেন্স কভারেজ। তবে, লাইফ ইনসিওরেন্সের কভার নিয়ে আলোচনা করতে গেলে কিছু বিষয় নিয়ে বিশদে বিবেচনা করা দরকার। এ ক্ষেত্রে সবার আগে দেখতে হবে কোন প্ল্যান বা পলিসিটি সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ঠিক কী লক্ষ্য পূরণের জন্য বিমা করা হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে আগে চিহ্নিত করতে হবে। অনেকে ভবিষ্যতে অর্থাৎ চাকরি পরবর্তী জীবনে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে, অনেকে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা বা বিয়ের কথা ভেবে বিনিয়োগ করেন। অনেকে আবার কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যে বিমা করেন। তাই সবার আগে এই কারণগুলি চিহ্নিত করা দরকার। এর পর ক্লেইম সেটেলমেন্ট রেশিও (claim Settlement Ratio) সহ একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখা দরকার। যে প্ল্যানটি বেছে নেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে অন্যান্য একই ধরনের প্ল্যানগুলির একটা তুলনা করেও দেখা যেতে পারে। একই কথা বলছে IRDAI বা ইনসিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া।
এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ বিমাকারী সংস্থার কথায়, লাইফ ইনসিওরেন্স পলিসির জন্য একটি যথাযথ অ্যামাউন্টের পরিমাণ হল বার্ষিক বেতনের ৬-১০ গুণ পর্যন্ত টাকা। লাইফ ইনসিওরেন্স পলিসির জন্য অ্যামাউন্টের এই হিসেব অন্য ভাবেও করা যায়। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামত, চাকরি থেকে অবসর নিতে এখনও যে ক'টি বছর বেঁচে আছে, সেই সংখ্যা দিয়ে বার্ষিক বেতনকে গুণ করে নির্ধারণ করা যেতে পারে ইনসিওরেন্সের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।