#নয়াদিল্লি: মাঝে মাত্র তিনদিন। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ হতে চলেছে। রেল থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে পর্যটন, আবাসন ক্ষেত্র-সহ প্রতিটি ক্ষেত্র-ই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কোন খাতে কত বরাদ্দ বাড়বে, কোথায় আয়করে ছাড় দেওয়া হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। বিগত বছরগুলিতে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় খুব একটা স্বস্তিতে দেখা যায়নি বাজারগুলিকে। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন বাজেটের পাঁচটি বিষয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে দেশের বাজার। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিশদে।
এ নিয়ে দীর্ঘ পর্যালোচনা করেছে ব্রোকারেজ ফার্ম Bernstein। এবার জেনে নেওয়া যাক পাঁচটি বিষয়!
*ফিস্কাল ডেফিসিট (Fiscal Deficit): ফিস্কাল ডেফিসিট অর্থাৎ রাজস্ব বা রাজকোষ ঘাটতি। সহজ কথায় বলতে গেলে সরকারের ঋণের হিসেব হল ফিস্কাল ডেফিসিট। ফিস্কাল ডেফিসিট বা রাজস্ব ঘাটতি মানে হল সব খাতে খরচ - ঋণ ছাড়া অন্য সব খাত থেকে আয়। এটি প্রকাশ করা হয়ে থাকে GDP বা গড় জাতীয় উৎপাদনের অংশ হিসেবে। ২০২০-২১ সালে ফিস্কাল ডেফিসিট বা রাজস্ব ঘাটতির ক্ষেত্রে বড়সড় পরিবর্তন হতে পারে। এক্ষেত্রে GDP-র ১৪ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে ফিস্কাল ডেফিসিট। এই ১৪ শতাংশের মধ্যে ৭.৭ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকারের, ৫ শতাংশ রাজ্য সরকারের এবং অফ ব্যালান্স শিটে থাকবে ১.৩ শতাংশ।
*ইক্যুইটি ট্যাক্সেশন (Equity Taxation): ইক্যুইটি মার্কেটে খরচের খাতে সাহায্য করার পাশাপাশি কর বাড়ানো বা কর ছাড়ের ক্ষেত্রেও বিবেচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে ২ ট্রিলিয়নের আশপাশে ডিসইনভেস্টমেন্ট টার্গেটের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আর সেই মতো কর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
*ক্যাপেক্স (Capex): কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে এই শব্দটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। Bernstein-এর আশা, ক্যাপেক্সের ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে সরকারকে। বছরে অন্তত ৩০ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে ক্যাপেক্স গ্রোথ রেটকে। সাবসিডির বিষয়গুলিও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
*বেসরকারি বিনিয়োগ: প্রাইভেট স্পেন্ডিং তথা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও খরচ নিয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। প্রাইভেট সেক্টরের পরিকাঠামো, নীতি রূপায়ন, PLI স্কিম, লিমিটেড ক্যাপেক্স-সহ নানা বিষয়েও পুনর্বিবেচনা করতে হবে। বাজেটে এই দিকগুলি নিয়েও সুর্নিদিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।
*NPA-র সমস্যা মেটানো: করোনা সংক্রমণের জেরে ২০২০ সাল দেশের ব্যাঙ্কিং সেক্টরের জন্য অত্যন্ত কঠিন সময় ছিল। তবে সবাই এক হয়ে লড়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এর মাঝেই দেশের ব্যাঙ্কগুলির উপর NPA-র বোঝা ক্রমে বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার একটি ব্যাড ব্যাঙ্ক সিস্টেম আনার কথা ভাবছে।
ভারতীয় ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে এই মুহূর্তে NPA-র মোট পরিমাণ ৮.৫ শতাংশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান, মার্চ মাস পর্যন্ত এই NPA-র পরিমাণ বেড়ে ১২.৫ শতাংশ হয়ে যাবে। তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে এই পরিসংখ্যান ১৪.৭ শতাংশের কাছেও পৌঁছাতে পারে। এক্ষেত্রে জমা সম্পত্তি ফেরত আনার ক্ষেত্রে এগ্রিগেটর হিসেবে কাজ করে এই ব্যাড ব্যাঙ্ক সিস্টেম। অর্থাৎ এই ব্যাড ব্যাঙ্ক সিস্টেমের সাহায্যে ব্যাঙ্কগুলির উপর থেকে NPA-র বোঝা কমানো যেতে পারে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আসন্ন বাজেটে এ নিয়ে পদক্ষেপ করতে পারে অর্থমন্ত্রক!