#নয়াদিল্লি: করোনা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে একযোগে লড়ছে সবাই। ব্যবসায়িক সংস্থা, কম্পানি থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মক্ষেত্র উৎপাদন ও আয় বাড়ানোর জন্য মরিয়া। গ্রাহকদের চাহিদা ও বিশ্বাস ফেরাতে ইতিমধ্যেই নানা পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ বেতনভুক্ত কর্মীর কাছে বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেতন বৃদ্ধি হতে পারে। তবে তার পরিমাণ অত্যন্ত কম। ২০১৮-১৯ সালের মতো আপনি যদি মনে মনে ১৫-২০ শতাংশ হাইক নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, তাহলে বাস্তবে ফিরে আসতে হবে। কারণ করোনা, লকডাউন আর দুর্বল অর্থনীতির জেরে ডবল ডিজিটের বেতন বৃদ্ধি এখন অতীত। এক্ষেত্রে ৮-৯ শতাংশ পর্যন্তই হতে পারে গড় বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ। আসুন, জেনে নেওয়া যাক কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা!
বেতন বৃদ্ধির রূপরেখা
এ বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন RightEmploy-এর জেনারেল ম্যানেজার পরীক্ষিত তিওয়ারি (Parikshit Tiwari)। তাঁর কথায়, ২০১৯ থেকে GDP-র হাত ধরে অর্থনীতিতে ধস নামতে শুরু করে। একাধিক সেক্টরে মন্দা দেখা দেয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-মার্চে GDP গিয়ে দাঁড়ায় ৫.৮ শতাংশে। এর জেরে ধীরে ধীরে বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ কমাতে শুরু করে কর্পোরেট সেক্টরগুলি। ২০১৮ সালে স্যালারি পার্সেন্টেজ হাইক ছিল ১০.১ শতাংশ। এক বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৯ সালে গড় বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ নেমে আসে ৯.৪ শতাংশে। এরই মাঝে ২০২০ সালে থাবা বসায় করোনা। গত বছর মার্চ মাসের পর অধিকাংশ সংস্থাই বেতন বৃদ্ধির পথে হাঁটেনি। অনেকে বেতন দেওয়ার সময় পিছিয়ে দিয়েছে। অনেকে আবার সিনিয়র ম্যানেজমেন্টে বেতন কমানোর পথে হেঁটেছে। বহু সংস্থা বিপাকে পড়ে বেতন কমানোর পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাইও করেছে। দেশে ২০১৯ সালে ভলান্টারি অ্যাট্রিশন (Voluntary Attrition) ছিল ১৪.৪ শতাংশ। এক বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২০ সালে তা কমে হয় ১২.১ শতাশ। এক্ষেত্রে গত বছর গড় বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ নেমে আসে ৬ শতাংশে। এই পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে বেতন বৃদ্ধির জন্য উচ্চাশা করে খুব একটা লাভ নেই।
তিনি আরও জানান, IT ও কনজিউমার টেকনোলজি সেক্টরে ২০১৯ সালে একটু ভালো পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল। এই সেক্টরগুলিতে ১০.৫-১১ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল। এবার এখানেও গড় বেতন বৃদ্ধি ৬.৫-৭ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে। এক কথায় বলতে গেলে, কোথাও ৯ শতাংশের বেশি বেতন বৃদ্ধি হওয়া প্রায় অসম্ভব।
ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আছে কি?
দেশ তথা বিশ্বের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে। কারণ ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন মিউটেশনের জোরে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। এখনও পুরো দেশে ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়নি। লকডাউন উঠলেও সে ভাবে চাঙ্গা হতে পারেনি ব্যবসাগুলি। এই পরিস্থিতিতে ডবল ডিজিট স্যালারি হাইকের জন্য ২০২৪ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এমনই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
এই বিষয়ে চেন্নাইয়ের HR কনসালটেন্ট স্যামুয়েল ভার্গিস (Samuel Varghese) জানিয়েছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রই ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য লড়াই করছে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে কয়েকটি IT, কনজিউমার টেকনোলজি ও ই-কমার্স সেক্টরে ১০-১২ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি হতে পারে। কিন্তু এই সম্ভাবনাও খুব কম। সত্যি বলতে করোনার জেরে চাকরি হারানোর পর এখনও পর্যন্ত দেশের ১ কোটি মানুষ চাকরি পায়নি। তাই পুরো বিষয়টি অনেকটা কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। এক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে দু'পক্ষকেই সংবেদনশী হতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Salary, Salary Hike, Work From Home