#কলকাতা: গৃহবধূ মানে ঘর সামলাবে, বাচ্চার দেখভাল করবে, এই ধারণা আজ অতীত। ঘর-বার দুটোই দক্ষ হাতে সামলাতে পারেন তাঁরা। পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অফিস করেন। আবার বাড়ি ফিরে সংসারও সামলান।
ইদানীং স্টার্ট আপের জোয়ার এসেছে। যে সব গৃহবধূর ব্যবসার প্রতি গভীর আগ্রহ রয়েছে, তাঁরা বিষয়টা ভেবে দেখতে পারেন। ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে বড়সড় ব্যবসা শুরু করতে হবে তার কোনও মানে নেই। ছোট ভাবেও শুরু করা যায়। একবার দাঁড়িয়ে গেলে তার পর বড় লাফ। তবে শুরুর আগে অল্প পুঁজিতে কোন ব্যবসা লাভজনক হতে পারে, সেটা বুঝে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সেই রকমই কিছু ব্যবসায়িক আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হল।
ই-টেইলিং: ইলেকট্রনিক রিটেইলিং বা ই-টেইলিং হল অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার একটি দুর্দান্ত উপায়। ফ্লিপকার্ট বা অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সাইটগুলোতে নিজের পণ্য তালিকাভুক্ত করা যায়। এরাই ক্যাটালগিং, ডেলিভারি এবং অর্থপ্রদানের মতো বিষয়গুলি পরিচালনা করবে। এদের সঙ্গে প্যানেলিং করার পর পোশাক, বাড়ির সাজসজ্জার আইটেম বা নিজের ইচ্ছে মতো পণ্য বিক্রি করা যায়। তবে এর জন্য অবশ্যই একজন পাইকারি ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করতে হবে। যার থেকে পণ্য নিয়ে ই কমার্স সাইটগুলিতে বিক্রি করা যাবে।
আরও পড়ুন: কোথায় বিনিয়োগ করলে লাভ, কোথায় লোকসান? দেখে নিন আজ বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি!টিফিন সার্ভিস: হাজার হাজার চাকরিজীবী কিংবা যাঁরা কাজের সূত্রে গ্রাম থেকে শহরে আসেন টিফিনের সময় তাঁরা স্বাস্থ্যকর বাড়িতে বানানো খাবার খোঁজেন। কেউ যদি তাঁদের চাহিদা মতো কম দামে টিফিনের খাবার দিতে পারেন, তাহলে মোটা টাকা উপার্জন করা সম্ভব। ব্যবসা বাড়লে অর্ডার অনুয়ায়ী সময়ে খাবার পৌঁছে দিতে রাঁধুনি নিয়োগ করা যায়। আর যদি ডেলিভারি নিয়ে চিন্তা থাকে তাহলে জোম্যাটো, সুইগি, গ্র্যাব, উবের ইটস-এর মতো ফুড ডেলিভারি অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়।
ডে কেয়ার সেন্টার: ডে কেয়ার সেন্টার গৃহিণীদের জন্য সেরা ব্যবসাগুলোর মধ্যে অন্যতম। খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। কিন্তু জব স্যাটিসফ্যাকশন মেলে ষোলো আনা। নিজের ছোট বাচ্চা থাকলেও অসুবিধা নেই। বরং সে খেলার সাথী পাবে। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য দরকার শুধু সামান্য জায়গা। সেটা বাড়ির ভিতর হলেই ভাল হয়। এবং এমন একজন দরকার যে বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার রান্না করতে পারবে। তাহলেই রমরমিয়ে চলবে ডে কেয়ার সেন্টার।
বাড়িতেই সেলুন: সেলুনের কাজ জানলে বাড়িতেই ছোট করে শুরু করা যায়। অবশ্য যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। জায়গাও লাগবে। অর্থাৎ বেশ কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে চিন্তা নেই। এর জন্য ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেওয়া যায়। বিশেষত ব্যবসায়িক লোনে সুদের হার স্বাভাবিকের চেয়ে কম। তবে হ্যাঁ, কর্মচারিও রাখতে হবে। আর মার্কেটিংয়ের জন্যও কিছু টাকা খরচ করতে হবে। তবে গৃহিণীদের জন্য সেলুন যে ভাল ব্যবসায়িক আইডিয়া সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট বা ফ্রিলান্সিং কোডিং: সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কিন্তু অফিসের ১০টা-৫টা কাজে আগ্রহ নেই? তাহলে ফ্রিলান্সিং শুরু করা যায়। অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, কোডিংয়ের আউটসোর্সিং। এর জন্য একাধিক ফ্রিলান্সিং সাইট আছে। একবার ক্লায়েন্ট বেস তৈরি হয়ে গেলে নিজেই ছোট কোম্পানি খুলতে পারেন যে কেউ।
বেকড পণ্য: বাড়ির লোক কি হাতের বেকড রান্না খেতে পছন্দ করেন? তাহলে হাতের জাদু অন্যদের দেখানোর এটাই সময়। ফুড ডেলিভারি অ্যাপের সাহায্যে অনলাইন বেকারি শুরু করা যায়। প্রথমদিকে মেনুতে কয়েকটি আইটেম রেখে শুরু করা যায়। সেগুলো ভাল বিক্রি হলে ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়বে। স্থানীয় বেকারি কিংবা মিষ্টির দোকানের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়।
রিমোট অ্যাসিস্ট্যান্ট: বিভিন্ন সংস্থা, বিশেষ করে ছোট কোম্পানিগুলি অফিসের কাজে সাহায্য করার জন্য রিমোট অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করে। এই ভার্চুয়াল সাহায্যকারীদের ঘণ্টা, দিন বা সপ্তাহের হিসেবে পেমেন্ট করা হয়। এঁরা এইচআর থেকে অ্যাকাউন্টিং, প্রায় সব বিভাগেই দক্ষ। তাই কোনও ফার্মের সঙ্গে রিমোট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ শুরু করা যায়। ধীরে ধীরে দক্ষতা এবং ব্যান্ডউইথের উপর নির্ভর করে অন্যান্য ক্লায়েন্টও ধরা যায়।
বুটিক অ্যান্ড টেইলারিং: ভাল ফ্যাশন সেন্স থাকলে বুটিকের ব্যবসা আদর্শ। প্যাটার্ন কাটিং বা টেলারিংয়ের কাজ ভাল না জানলে একজন দর্জি নিয়োগ করা যায়, যিনি স্কেচ এবং ইলাস্ট্রেশনগুলোকে প্রাণবন্ত রূপ দিতে পারেন। ছোট বুটিক সেটআপ করতে শুধুমাত্র একটু জায়গা দরকার। বাড়িতে থাকলে ভাল। না হলে ভাড়া নেওয়া যায়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।