#নয়াজিল্লি: সন্দেহ নেই, গত বছরে GDP-র মান ছিল নিম্নমুখী। ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষের যে বাজেট পেশ করবেন, তা কি GDP বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারবে? অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ কি দেশে নিয়ে আসতে পারবে সরকার? বাজেট পেশে করার প্রাক্কালে এক ঝলক দেখে নেওয়া যাক পরিস্থিতি!
১. GDPকরোনাভাইরাসের সংক্রমণ গত বছরে সারা বিশ্বের মতো দেশের অর্থনীতিকেও বসিয়ে দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে আগের মন্দার তুলনায় এই অতিমারী কিছু বিপরীত অবস্থার উদ্রেক করেছে। যেমন, ২০১৮ সালে IL&FS-এর ব্যর্থতার ফলে একটা ডি-স্টকিং পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে আনলকের পর আর্থিক অবস্থা একটু হলেও ভালোর দিকে গিয়েছে, সে কথা বলতে ভুলছেন না বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে চার-চাকা এবং দুই-চাকা ক্ষেত্রে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডি-স্টকিং পরিস্থিতির সমাপ্তির আশা করছেন সবাই। রিয়েল এস্টেট সেক্টরেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁরা জানাচ্ছেন যে নানা ক্ষেত্রে সরকারি বিনিয়োগ দেশে ব্যক্তিগত চাহিদাবৃদ্ধির সহায়ক হয়েছে। সব মিলিয়ে GDP ঘুরে দাঁড়ানোর আশা আছে। তবে রাতারাতি সেটা হবে না। কেন না, সরকারের অনেক দফতর বাড়ি থেকে কাজ চালাতে পারবে না। ফলে, এখনও অল্প হলেও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি কথা ভুলে গেলে চলবে না- আর্থিক পরিস্থিতির পুনরুদ্ধার এখনও দুর্বল স্তরে রয়েছে,আর্থিক মন্দা এবং তার ফলে আয় অল্প হওয়ায় সরকারের উন্নতিমূলক কাজ বাধা পেতে পারে, রাজ্য সরকার কী বাজেট পেশ করবে তার উপরে সবটা নির্ভর করছে কেন না তারাই ৭০-৯০% বেশি খরচ করে কেন্দ্রের চেয়ে!
২. সরকারের কোষে টাকা কতটা বাড়তে পারেসরকারের কোষে টাকা বা রাজস্ব যে পরিমাণে বাড়বে, সেই অনুপাতে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করার সম্ভাবনা থাকবে। তবে এই বছরে অবস্থা বেশ টালমাটাল। কেন না, গত বছরে রাজস্ব ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা নানা ক্ষেত্রের প্রাইভেটাইজেশনের উপরে জোর দিচ্ছেন। পাশাপাশি বলছেন যে এবারের বাজেট শুরু হতে পারে খুব সামান্য GDP বৃদ্ধি দিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে এর অনুপাত হবে ৯%, সঙ্গে ৪% মূল্যস্ফীতির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সে দিক থেকে দেখলে রাজস্ববৃদ্ধির জন্য সরকারের নানা রকমের কর বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে।
৩. ইনডিরেক্ট ট্যাক্সে কাটছাঁটকরোনার জেরে দেশের কর্মসংস্কৃতির অবস্থা বেশ খারাপ। নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো থেকে সে কারণে ইনকাম ট্যাক্স আদায় করার কোনও আশা নেই। এক্ষেত্রে ইনডিরেক্ট ট্যাক্সে কিছু কাটছাঁট ঘোষণা করা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৪. কোন কোন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়তে পারেবিশেষজ্ঞরা বলছেন যে শহরজীবনে যদি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে রিয়েল এস্টেট শিল্পের দিকে জোর দিতে হবে। পাশাপাশি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং টেক্সটাইল শিল্প নিয়েও সরকারের বেশ কিছু প্রকল্প আছে। তবে এই ক্ষেত্রগুলোতে এই বাজেটে বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়া হবে কি না, তা প্রশ্নাতীত নয়।
৫. স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চিন্তাভাবনাদেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞরা ভ্যাকসিনেশন নিয়ে সরকারকে অধিক উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। পাশাপাশি জানাচ্ছেন যে নিম্নবিত্তদের জন্য বাসস্থান, জলসমস্যা, কর্মসংস্থানের মতো প্রাথমিক বিষয়গুলোর সমাধান করা সম্ভব না হলে অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা দূর করা যাবে না।
৬. সারচার্জ নিয়ে চিন্তাভাবনাগত বছরের সেপ্টেম্বরের পরে দেশের আর্থিক অবস্থা সামান্য হলেও ভালো হয়েছে। সে দিক থেকে দেখলে সারচার্জ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা প্রত্যক্ষ কর আদায়ের উপরে জোর দিচ্ছেন যা রাজস্ব বৃদ্ধির সহায়ক হবে।
৭. পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক নিয়ে চিন্তাভাবনাবিশেষজ্ঞদের দাবি- রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম নিয়ে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে কোনও ব্যাঙ্ক ইনভেস্টমেন্ট পলিসি নিয়ে আসা হতে পারে। বেশ কিছু পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কের প্রাইভেটাইজেশনের উপরেও জোর দিচ্ছেন তাঁরা।