#নয়াদিল্লি: অ্যামাজনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় আইন-কানুনকে ‘দুমড়ে-মুচড়ে’ ব্যবহার করেছে মার্কিন ই-কমার্স সংস্থাটি। লক্ষ লক্ষ ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ ‘জলাঞ্জলি’ দিয়ে, বাড়তি ‘সুবিধে’ করে দিয়েছে হাতেগোনা কয়েকজন বড় ব্য়বসায়ীকে। অ্য়ামাজনের গোপন নথি ঘেঁটে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এনেছে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্স। সামনে এনেছে অ্যামাজনের ইন্ডিয়া-স্ট্রাটেজিও।
কী অভিযোগ অ্যামাজনের বিরুদ্ধে?
ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা গিয়েছে, হাতে গোনা কয়েকটি ভারতীয় সংস্থাকেই নিজেদের প্ল্যাটফর্মে বাড়তি সুবিধে করে দিয়েছে অ্যামাজন। অ্যামাজনের দাবি অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এ দেশে চার লক্ষের মতো বিক্রেতা তাদের প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা করেছেন। যদিও ফাঁস হওয়া নথি বলছে, এই চার লক্ষের মধ্যে, মাত্র ৩৫টি বড় সংস্থাই দুই-তৃতীয়াংশ ব্যবসা করেছে। এর মধ্যে দু’টি সংস্থায় আবার অ্যামাজন সরাসরি অংশিদার। ২০১৯ সালে এই দু’টি সংস্থার ব্য়বসার পরিমাণ, অ্যামাজনের মোট বিক্রির ৩৫ শতাংশ। নিজেদের স্বার্থেই অ্যামাজন বড় ব্যবসায়ীদের এই সুবিধে করে দিয়েছে বলে অভিযোগ।
এ দেশে অ্যামাজনের ব্যবসার ধরন নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলে আসছে ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলি। ভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির অভিযোগের ভিত্তিতে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া। মার্কিন ই-কমার্স সংস্থাটি পাল্টা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় সেই তদন্ত আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগের নিয়ম ভাঙার অভিযোগে, অ্যামাজনের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে অ্যামাজনে পাল্টা দাবি, তারা ভারতীয় আইন মেনেই এ দেশে ব্যবসা করে। একইভাবে রয়টার্সে প্রকাশিত নথিকেও ভুয়ো বলে দাবি করেছে মার্কিন সংস্থাটি।
ফাঁস হওয়া একটি নথিতে দাবি করা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোনও বুদ্ধিজীবী বা পণ্ডিত নন, তবে তিনি বিশ্বাস করেন, দক্ষ প্রশাসন পরিচালনাই সরকারের সাফল্য়ের চাবিকাঠি। তিনি সরল, যুক্তিযুক্ত চিন্তাভাবনাই বেশি পছন্দ করেন।’ গত কয়েক বছরে ভারতে দ্রুত গতিতে ব্য়বসা বাড়িয়েছে অ্য়ামাজন। এদেশে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথাও ঘোষণা করেছে। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, অ্যামাজনের এই গোপন নথি রাজনৈতিকভাবে যথেষ্টই স্পর্শকাতর। আগামী দিনে যা সমস্য়ায় ফেলতে পারে মার্কিন ই-কমার্স সংস্থাটিকে।