#বীরভূম: বীরভূমের সিউড়ি শহরে চন্দ্রগতি স্কুলের কাছে ছিল একটি চায়ের দোকান। রমরমিয়ে চলত সেই চায়ের দোকান। ওই চায়ের দোকানের মালিক সুশান্ত দাস সবার কাছে পরিচিত ছিলেন দাস কাকা হিসাবেই। তিনি যে শুধু একজন চা বিক্রেতা ছিলেন এমনটা নয়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজের জন্য তার পরিচয় ছিল সিউড়ি শহরের আনাচে কানাচে। কখনও কারোর জামা কাপড়ের প্রয়োজন, কারোর বই খাতা, সবকিছু তিনি ওই চায়ের দোকান থেকে জোগাড় করে দিতেন। এই সকল জিনিস জোগাড় করার ক্ষেত্রে তিনি যদি আবার কখনও আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়তেন তাতে খরিদ্দারদের থেকে হাত পেতে চাওয়ার জন্যও কুণ্ঠিত হতেন না। তবে তার এমন আবদারে তার খরিদ্দাররা কখনও তার উপর রাগান্বিত হতেন না। বরং দুই হাত তুলে ওই দাস কাকার চাহিদা মেটাতেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই দাস কাকা গতবছর জুন মাসের ৪ তারিখ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার এই মৃত্যুতে শোকোস্তব্ধ হয়ে পড়েন তার চায়ের দোকানে খরিদ্দার এবং অনুরাগীরা। আর দেখতে দেখতে যখন তার মৃত্যু এক বছর পার করল সেই সময়ই তার মৃত্যুবার্ষিকীতে তার অনুরাগীদের মধ্যে সিউড়ি শহরের কয়েকজন যুবক বিনামূল্যে চায়ের আসরের আয়োজন করলেন। শুক্রবার রাতে এই চায়ের আসরের আয়োজন করা হয় দাস কাকার যেখানে চায়ের দোকান ছিল তার সামনে থাকা একটি চায়ের দোকানে। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত্রি ন'টা পর্যন্ত বিনামূল্যে এই চা পানের ব্যবস্থা করা হয়। এদিন এই দোকানে এই সময়ের মধ্যে যারা এই চা খেয়ে যাচ্ছিলেন তাদের কারোর কাছ থেকেই টাকা নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন - মাধ্যমিকে পাশ করতে পারেনি, লজ্জায় আত্মঘাতী বীরভূমের ছাত্রীএমন ব্যবস্থাপনার আয়োজন রাখা যুবকদের দাবি, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বছরের অধিকাংশ সময় আমরা সন্ধ্যাবেলায় এই দাস কাকার চায়ের দোকানে সময় কাটিয়েছি। কিন্তু তিনি হঠাৎ গতবছর করোনার সময় সকলকে ছেড়ে চলে যান। তার চলে যাওয়া বলতে কেবল একজন চা ওয়ালা চলে গেলেন এমনটা নয়, চলে গেলেন সিউড়ি শহরের একজন সমাজসেবীও। তাই আমরা তার এই মৃত্যুবার্ষিকীকে স্মরণ করতে এবং অন্যান্যদের স্মরণ করাতে এই আয়োজন করেছি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।