#বীরভূম: জন্ম থেকেই দু'হাত নেই। একসময় তিনিও 'এর ওর' কাছে চেয়ে খেতেন। তবে একদিন এক শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। সেই শিক্ষক তাকে বলেন, 'তুমি কি পড়াশোনা করবে?' এই কথা শুনে জগন্নাথ মহারা ভাবেন, পড়াশোনা ছাড়া তো তার আর কোনও উপায় নেই। কারণ তার দু'হাত নেই! এইভাবে চলতে থাকলে তাকে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করতে হবে। এই কথা ভেবেই বীরভূমের সিউড়ির হাটজান বাজারের জগন্নাথ ওই শিক্ষকের কাছে পড়াশোনার জন্য রাজি হয়ে যান।
এরপরেই মোড় নিতে শুরু করে তার জীবনের। হাত না থাকা অবস্থাতেই পায়ে করে পড়াশুনা শুরু করা জগন্নাথ ধাপে ধাপে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কলেজে পাড়ি দেন। অত্যন্ত দুঃস্থ দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা জগন্নাথ কলেজের গণ্ডি পার হওয়ার পর তার মনে হয়, এইভাবে অনেক ছেলে-মেয়ে কষ্টের সঙ্গে পড়াশোনা করছে। সেই কথা ভেবেই জগন্নাথ হাটজান বাজার এলাকায় একটি বিনামূল্যের পাঠশালা তৈরি করেন। যার নাম দেন 'বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পাঠশালা'।
আরও পড়ুন: অর্পিতাকে কতটা চেনেন? পার্থর জবাবে ইডি আধিকারিকদের মাথায় হাত!
প্রথম দিকে এই পাঠশালা একটি গাছের নিচে শুরু হয় গত দু'বছর আগে। তখন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচ থেকে ছয় জন। এরপর এখন দেখতে দেখতে এই পাঠশালায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা একশোর কাছাকাছি। এখানে যারা পড়াশোনা করে তারা প্রত্যেকেই দুঃস্থ দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা পড়ুয়া। পড়াশোনা ছাড়াও এখানে নাচ, গান, ছবি আঁকা ইত্যাদি শেখানো হয়। গাছ তলায় শুরু হওয়া এই পাঠশালা এলাকার এক সহৃদয় ব্যক্তির সহযোগিতায় এখন ছাদ পেয়েছে।
আরও পড়ুন: 'বাঁচবে না কেউ', মমতা-মোদি বৈঠকের আগে পিনারাই বিজয়নের তুলনা টানলেন সুকান্ত মজুমদার
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, জগন্নাথ মহারার হাত না থাকার কারণে সে পায়ে করে পড়াশোনা শিখেছে এতদিন। আর এই স্কুলে তিনি পায়ে করেই তার পড়ুয়াদের শিক্ষা দিয়ে আসছেন। বিষয়টি অনেকের কাছে অবাস্তব মনে হলেও জগন্নাথ মাহারা এই অবাস্তবকেই বাস্তব করে দেখাচ্ছেন তার অদম্য প্রচেষ্টায়। এই জগন্নাথ মাহারা দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তিনিও চান তার পড়ুয়ারাও যাতে আগামী দিনে এই ভাবেই এগিয়ে যায়। --মাধব দাস
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Birbhum news, West Bengal news