বাঁকুড়াঃ গন্ধেশ্বরী নদী হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়া জেলার একটি নদী। এটি দ্বারকেশ্বর নদের একটি উপনদী। এর দৈর্ঘ্য ৩২ কিলোমিটার । জেলার পশ্চিম সীমানায় শালতোড়া থানার কুলুরবাঁধ এলাকা এই নদীর উৎসস্থল। মুরলু টিলার দক্ষিণ-পশ্চিম ঢালের জল গড়িয়ে এসে এই কুলুর বাঁধে সঞ্চিত হয়। এই কুলুর বাঁধের নীচের দিকে জলের স্রোত নেমে আসে ঝর্নার মতো। সৃষ্টি হয় ছোট নালার। বাঁকুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা গন্ধেশ্বরী নদী বক্ষে নাব্যতা বাড়াতে খননকার্য্য শুরু করলো বাঁকুড়া সেচ দপ্তর। আর এই সংস্কারের কাজ বিজ্ঞানসম্মতভাবে করার দাবি জানালেন স্থানীয় সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, বাঁকুড়া খরা প্রবণ এলাকা, অথচ বৃষ্টিতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়। কারণ নদী সংলগ্ন পলাশতলা খালের সংস্কার জরুরী বলে তিনি জানান। সেচ দপ্তর সূত্রে খবর, বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন জুনবেদিয়ায় প্রায় ৪ কিলোমাটার ও সতীঘাট থেকে গন্ধেশ্বরী সেতু পর্যন্ত ৭২০ মিটার নদী বক্ষের মাটি তুলে জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। একই সঙ্গে সতীঘাট সংলগ্ন এলাকায় কয়েকশো মিটার নদীপাড় বাঁধানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
পুরো প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া শহরের ঠিক পাশ দিয়ে বয়ে চলা গন্ধেশ্বরী নদীর নাব্যতা কমে আসছিল। একটা আস্ত নদী সরু খালের চেহারায় রুপান্তরিত হচ্ছিল। ফলে ফি বছর বর্ষায় এই শহরের জুনবেদিয়া, কেশিয়াকোল, মোলডুবকা, সতীঘাট, রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ছিল। ফলে বছরের ঐ কয়েকটা দিন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের দূর্ভোগের অন্ত থাকতোনা। আগামী বর্ষার আগেই এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। ফলে এবার নদী সংস্কারের কাজ শেষ হলে সেই সমস্যা মিটবে বলেই অনেকে মনে করছেন। গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটির পক্ষে সন্তোষ ভট্টাচার্য বলেন, শহরের মানুষকে নিয়ে তাঁদের সংগঠন এবিষয়ে আন্দোলন করে আসছে। দেরীতে হলেও কাজ শুরু হয়েছে, এটা ভালো খবর। যেটুকু কাজ হবে কড়া নজরদারির মধ্যে হোক। একই সঙ্গে নদী থেকে তোলা মাটি, পলি নদীর পাড়ে জমা না রেখে পৌরসভা নিয়ন্ত্রিত পাঠক পাড়ার মাঠে ফেলা যেতে পারে।
নদীর পাড়ে ঐ মাটি পড়ে থাকলে বর্ষায় গলে তা নদীতেই পড়বে। মাঠে ঐ মাটি দিলে মাঠটিও একই সাথে সংস্কার হয়ে যাবে। একই সঙ্গে নদী সমস্যা সমাধানে নদী তীরবর্ত্তী বেআইনী নির্মাণ ভেঙ্গে ফেলার দাবিও জানান তিনি। বাঁকুড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত কাউন্সিলর দিলীপ আগরওয়াল বলেন, ৭ নম্বর সহ নদী তীরবর্ত্তী ওয়ার্ড গুলির মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। ফি বছর বর্ষায় ঐ এলাকা গুলি জলমগ্ন হয়ে যেতো। অনেক আগেই রাজ্য সরকার টাকা বরাদ্দ করেছিল। গ্রীণ ট্রাইব্যুনালের মেশিন দিয়ে মাটি খননের আপত্তিতে কাজ শুরু করা যায়নি। পরে এই সমস্যা সমাধান হয়েছে। এবার এর সুফল বাঁকুড়াবাসী পাবেন বলে তিনি মনে করছেন বলে জানান।
Joyjiban Goswamiনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura, South Bengal