বাঁকুড়া: লাল মাটির বাঁকুড়ায় শিল্প বলতে তেমন কিছু গড়ে ওঠেনি। এদিকে জমিয়ও রুক্ষ। তারই মধ্যে আলু চাষ করে প্রতিবছর কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখেন এখানকার কৃষকরা। চলতি বছরও যথারীতি তাঁরা আলু চাষ করেছিলেন। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে, তবে বেশিরভাগ কৃষকই মহাজনের কাছ থেকে ধার করে আলুর বীজ বসান। তবে চলতি বছর যা পরিস্থিতি তাতে লাভ তো দূরের কথা বিপুল ক্ষতির বোঝা সামলাতে না পেরে সর্বস্বান্ত হতে পারেন বাঁকুড়ার বেশিরভাগ আলু চাষি। কারণ এবার আলুর তেমন একটা দাম নেই।
পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে আলু উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে আছে বাঁকুড়া। এই জেলার কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস, পাত্রসায়ের, বিষ্ণুপুরের পাশাপাশি দক্ষিণের তালডাংরা, সিমলাপাল, রাইপুর ও সারেঙ্গা ব্লক এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আলু চাষ হয়। চলতি বছরে বাঁকুড়া জেলায় এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ পাঁচ হাজার একর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু চাষে এখানকার একজন কৃষকের একর প্রতি খরচ হয় ৬২ হাজার টাকারও বেশি। কিন্তু সমপরিমাণ জমিতে উৎপাদিত আলুর দাম উঠছে বড়জোর ৪৮ হাজার টাকা। ফলে প্রতি একরে ১৪ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে আলু চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কী করে ব্যাঙ্ক ও মহাজনের ঋণ শোধ করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না কৃষকরা।
আরও পড়ুন: রাস্তার সঙ্গে পানীয় জলের সমস্যা, দ্রুত সমাধান না হলে পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি
বাঁকুড়ার অর্থনীতি অনেকটাই আলু চাষের উপর নির্ভর করে। এবার আলুর দাম না ওঠায় জেলার অর্থনীতি ভেঙে পড়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে কৃষকরা দাবি তুলেছেন, আগের মত সরকার সহায়ক মূল্য ঘোষণা করে বেনফেড, কনফেড, ইসিএসের মাধ্যমে সরাসরি চাষির কাছ থেকে আলু কিনে নিক।
শুধু কৃষকরা নয় আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি বিভাস দে বলেন, 'আঞ্চলিক ও গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি কৃষি ও কৃষক। আমরাও আলু চাষিদের দাবিকে সমর্থণ জানাই। সংগঠনগতভাবে আলু চাষিদের পাশে আছি।' আলুর সহায়কমূল্য নির্দ্ধারণ, ভিন রাজ্য ও ভিন রাষ্ট্রে আলু রফতানির অনুমতি সহ বেশ কিছু দাবি তাঁরা কৃষি মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি আকারে জমা দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জি
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।