#বাঁকুড়া: প্রায় প্রত্যেকেই তাদের ছোট্টবেলা পুতুল নিয়ে কেটেছে। কখনো পুতুলের বিয়ে দিয়ে আবার কখনও মজার ছলে পুতুলের সাথে কথা বলে কেটেছে সময়। তবে এখনকার যুগে স্মার্টফোন কেড়ে নিয়েছে সেইসব দিন। দৈনন্দিন স্মার্টফোনে বিভিন্ন খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ছে ছোট শিশুরা। তবে স্মার্টফোনের যুগেও বাড়িতে পুতুলের জায়গা আলাদা করে রেখেছেন বাঁকুড়া জেলা স্কুলের শিল্প শিক্ষক এবং নেশায় চিত্র ও সঙ্গীত শিল্পী মহাদেব মুখার্জি। একেবারে বাড়িতে বানিয়ে ফেলেছেন পুতুলের বিশাল সংগ্রহশালা। তবে শিক্ষক শ্রী মহাদেব নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় পদবী ব্যবহার করতে চান না।
শ্রী মহাদেবের জন্ম বাঁকুড়া ওন্দা থানার অন্তর্গত তেঁতুলমুড়ি গ্রামে। কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি। সেখান থেকেই পুতুলের প্রতি ভালোবাসা। পুতুলকে বাঁচিয়ে রাখতে শুরু করেন দেশ বিদেশ থেকে পুতুল সংগ্রহের কাজ। স্ত্রী, এক সন্তান এবং এই পুতুলদের সাথে নিয়ে বসবাস করেন বাঁকুড়া কেন্দুয়াডিহিতে। শধুমাত্র নিজের শখে গত ১৭ বছর ধরে রাজ্য এবং রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিনি সংগ্রহ করেছেন সাড়ে ৯০০ পুতুল। তাঁর বাঁকুড়া শহরের কেন্দুয়াডিহির বাড়ি সেজে উঠেছে পুতুল দিয়েই। এই পুতুল সংগ্রহশালায় দেখতে আসেন অনেকে। এই পুতুলগুলো বেশিরভাগটাই তিনি নিজে হাতে সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন তিনি যতদিন বাঁচবেন পুতুল ও তার সাথে বাঁচবে। তার বাড়ির কাঠের গ্যালারি সংগ্রহশালায় রয়েছে হরেক রকম পুতুল।
আরও পড়ুন - সুড়ঙ্গ নাকি নিকাশি ব্যবস্থার টানেল? দানা বাঁধছে রহস্য! তুমুল চাঞ্চল্য বাঁকুড়ায়
আরও পড়ুন - অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ২০০ টি মোবাইল উদ্ধার করল পুলিশ
রয়েছে বাংলার বিভিন্ন রকমের ষষ্ঠী পুতুল, নদীয়ার ঘূর্ণির নিমাই পুতুল, পুরুলিয়ার ঝালদার দীপলক্ষী পুতুল, মুর্শিদাবাদের কাঁঠালিয়া পুতুল, উড়িষ্যার রঘুরাজপুরের পট পুতুল, নিজের জেলার তালডাংরার বিবড়দার ভাদু, পাঁচমুড়ার ষষ্ঠী ও হিঙ্গল পুতুল, রাজগ্রামের বুড়ি পুতুল, হনুমান পুতুল, সুদূর বারানসীর রাজা রাণী পুতুল সহ বিভিন্ন ধরনের পুতুল । সাথে রয়েছে বিদেশের পুতুলও। সংগৃহীত পুতুল তাঁর শিল্পচর্চার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তার ছবির ক্যানভাসে ফুটে ওঠে বিভিন্ন পুতুলের রূপছায়া। তাঁর আক্ষেপ বর্তমান সময়ে মাটির পুতুল হারিয়ে যাচ্ছে, সেই জায়গা দখল করছে চিনা পুতুল থেকে নানান বাহারি খেলনা। হাজার বছরের প্রাচীণ এই শিল্পকলার অবলুপ্তিতে ভীষণভাবে ভারাক্রান্ত তিনি নিজে।
তবে আগামী দিনে এই পুতুল শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার মরিয়া প্রয়াস তিনি করবেন বলে জানান। এবং সরকারের কাছে আবেদন জানান যাতে এই পুতুলগুলো যদি আরো বড় বেষ্টিত জায়গায় বা কোন মিউজিয়ামে সুরক্ষিতভাবে মাথা উঁচু করে রাখা হয় তাহলে তার প্রানের প্রিয় সঙ্গী গুলিকে তিনি প্রদর্শনের জন্য তাদের হাতে তুলে দেবেন।
JOYJIBAN GOSWAMI
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura news