আগামী মঙ্গলবার গঙ্গা দশহরা। হিন্দু লোকবিশ্বাস অনুযায়ী এই দিনের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। মনে করা হয়, এটি অত্যন্ত পবিত্র তিথি। এই দিনে কিছু পবিত্র আচার পালন করলে জীবনে উন্নতি হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
যদি কোনও পরিবারে আর্থিক সঙ্কট আসে, তবে গঙ্গা দশহরার দিন একটি রুপোর পাত্রে গঙ্গা জল ভরে বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে রাখলে সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব। পাশাপাশি পুজোর ঘর এবং রান্নাঘরের উত্তর-পূর্ব দিকে সর্বদা গঙ্গা জল রাখা দরকার, এতে অর্থনৈতিক উন্নতি ও সাফল্য লাভ সম্ভব।
পণ্ডিত গোবিন্দ মোহন বলেন, দেবী গঙ্গা ভগবান বিষ্ণুর চরণ থেকে মর্ত্যে এসেছিলেন, ব্রহ্মা তাঁকে কমন্ডলে ধারণ করেন। ভগবান শিবের জটা তাঁর গতি শান্ত করে। এর পর ভগীরথের তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে শিব গঙ্গাকে পৃথিবীতে নামিয়ে আনেন। সেই দিনটি ছিল জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল দশমী তিথি। সেই দিনই পালিত হয় গঙ্গা দশহরা। এই বছর ৩০ মে সেই তিথি পালিত হবে।
এই দিনে ভক্তরা গঙ্গাস্নান করলে পাপ নাশ হয়। পণ্ডিত গোবিন্দ মোহন বলেন, সকলেই পূর্বপুরুষের মোক্ষ লাভের উদ্দেশে পুজোপাঠ করেন। কিন্তু তাঁরা যদি গঙ্গাস্নান না করেন তবে সেই মোক্ষলাভ সম্ভব নয়।
নিষ্ঠা ভরে গঙ্গাস্নান—
গঙ্গা দশহরার দিন নিষ্ঠা ভরে গঙ্গাস্নান করা প্রয়োজন। কোনও ব্যক্তি যদি আর্থিক সঙ্কটে থাকেন বা অর্থনৈতিক উন্নতি বন্ধ হয়ে যায় তবে তাঁকে রৌপ্য পাত্রে গঙ্গাজল ভরে বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে রাখতে হবে। ভগবান শিব ও দেবী গঙ্গার পুজোও করতে হবে। এই দিনে দান করলেও ভাল ফল পাওয়া যায়। গঙ্গা পুজোর সময় ‘ওম নমঃ শিবায়ৈ নারায়ণ্যায়ৈ দশহরায়ৈ গঙ্গায়ৈ নমঃ’ মন্ত্রটি জপ করা উচিত।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার হাতে টাকা আসবে? না জলের মতো খরচ হবে? রাশি মিলিয়ে জানুন
গঙ্গা আনয়নের কাহিনি—
পুরাণ অনুযায়ী, রাজা ভগীরথ তাঁর পূর্বপুরুষদের শাপমুক্ত করার জন্য তপস্যা শুরু করলেন। গঙ্গা স্বর্গের নদী, তাঁর উৎপত্তিস্থল বিষ্ণুধাম। গঙ্গা আনয়ন করলেই উদ্ধার পাবেন ভগীরথের পূর্বপুরুষেরা। রাজা ভগীরথ কঠোর তপস্যা করে মাতা গঙ্গা ও ভগবান শিবকে খুশি করেছিলেন। পৃথিবীতে আসতে রাজি হলেও দেবী গঙ্গার বেগ এত বেশি ছিল যে, পৃথিবীর ক্ষমতা ছিল না তাঁকে ধারণ করার। তাই রাজা ভগীরথের তপস্যায় খুশি হয়ে ভগবান শিব তাঁর জটায় প্রথমে ধারণ করলেন গঙ্গাকে। তারপর গঙ্গার প্রবাহ নামিয়ে দিলেন হিমালয়ের সেই স্থানে, যাকে আমরা গোমুখ বলে জানি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।