#ঢাকা: সিলেটের পর এবার মৌলভীবাজার ৷ সিলেটে জঙ্গি নাশকতার জের কাটার আগেই ফের বাংলাদেশে জঙ্গি নিশানায় পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষী। ফের বাংলাদেশে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ মিলল ৷ মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মৌলভীবাজারের বড়হাট ও ফতেহপুর এলাকায় দুটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বিডি২৪ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানোর কথা স্বীকার করেছেন ৷ একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পুলিশের বিশেষ ইউনিট সোয়াট বাহিনী বাড়ি দুটি ঘিরে রেখেছে ৷ প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীও নামানো হবে ৷
বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই বাড়িতে ৭ থেকে ৮ জন জেএমবি জঙ্গি লুকিয়ে আছে বলে সন্দেহ ৷ তাদের মধ্যে দু-একজন মহিলা জঙ্গিও থাকতে পারে ৷
বুধবার মৌলভিবাজারে দুটো আলাদা জঙ্গি আস্তানার খবর পায় পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছলেই পুলিশ ও নিরপাত্তা রক্ষীদের লক্ষ করে গ্রেনেড ও গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। সকালে জঙ্গি আস্তানার খবর পাওয়ার পরই ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মীর মাহবুব রহমান জানিয়েছেন, পুরসভার বড়হাট এলাকায় একটি দোতলা বাড়ি এবং খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজার এলাকার একটা একতলা বাড়িেত জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে বলে খবর পাওয়া যায়। এই বাড়ি দুটো ঘিরে রাখে নিরাপত্তা রক্ষীরা। দুই আস্তানা থেকেই পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ও গ্রেনেড হামলা চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। অভিযান শুরু আগেই এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়ি দুিটর মালিক সইফুল ইসলাম নামে লন্ডন প্রবাসী।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বাড়ি থেকে ক্রমাগত নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর উপর গুলি চালাচ্ছে জঙ্গিরা ৷ এমনকি সোয়াট বাহিনীর উদ্দেশ্যে গ্রেনেডও ছোঁড়া হয়েছে বলে খবর ৷
চারদিনের যুদ্ধ শেষে সোমবারই জঙ্গি দখল মুক্ত করা হয় সিলেটের আতিয়া ভবন ৷ ৯৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলছিল ‘অপারেশন টোয়ালাইট’। সোমবার বিকেলে সিলেটের আতিয়া ভবনের দখল নিল বাংলাদেশ সেনা ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন। বাড়ির তিনতলায় মিলল এক মহিলা সহ ৪ টি দেহ। এর মধ্যে দুটি মৃতদেহে লাগানো ছিল শক্তিশালী সুইসাইড সুইচার। মৃত ২ জঙ্গিকে জামাতের বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বলে শনাক্ত করেছেন গোয়েন্দারা।
জঙ্গিরা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত ও সুসজ্জিত হওয়ায় অভিযান শেষ হতে অনেকটা সময় লাগল বলে জানিয়েছেন সেনা আধিকারিকরা। অন্যদিকে, ISIS হামলার দায়স্বীকার করলেও, দেশে আইএস-এর অস্তিত্ব মানতে নারাজ বাংলাদেশ সরকার। হামলার পিছনে স্থানীয় জঙ্গিরাই রয়েছে বলে দাবি শেখ হাসিনা প্রশাসনের।
বৃহস্পতিবার মাঝরাতে শুরু হয়েছিল জঙ্গি-পুলিশ গুলির লড়াই। শুক্রবার আটঘাট বেঁধে অভিযানে নেমেছিল সেনাবাহিনী। তা সত্ত্বেও জঙ্গিমুক্ত করা যায়নি সিলেটের পাঠানপাড়ার একটি বহুতলকে। রবিবারও দিনভর জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোদের।
রবিবার সকাল থেকেই দফায় দফায় গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। বহুতলটি চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে সেনা, র্যাব ও সিলেট পুলিশের যৌথ বাহিনী। জঙ্গিদের বাগে আনতে টিয়ার শেল ও ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করেও কাজ হয়নি। লাভ হয়নি গ্রেনেড ছুড়েও। তবে লাগাতার গুলির লড়াইয়ে ৪ জঙ্গিকে খতম করেছে সেনাবাহিনী ৷
বাংলাদেশের অন্তত দুটি সংবাদ সংস্থার দাবি, মৃত চারজনের মধ্যে দু’জন জামাত উল মুজাহিদি্ন বাংলাদেশ বা জেএমবির কট্টর জঙ্গি।