অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন,এখানকার বহু বাঙালিও নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পেরে ২৫ একর জমির উপর ৬৪ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা এই ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি হিসাবে থাকতে বাধ্য হবেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সমস্ত ডি-ক্যাম্প গুলি গুড়িয়ে দেবে বিজেপি সরকার। কিন্তু বাস্তবে ফল হয়েছে উল্টো। ২০১৮ সালে দুধোনী নদীর তীরে ২ লক্ষ ৮৮ হাজার বর্গফুটের পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ডিটেনশন ক্যাম্পের কাজ শুরু হয়।
advertisement
বর্তমানে ৮০ শতাংশ কাজ প্রায় শেষ। সমালোচকদের দাবি, গোয়ালপাড়ার এই ডিটেনশন ক্যাম্পের ভিতর ৭টি ভালো মাপের ফুটবপল মাঠ করা যেতো। প্রাচীরে ঘেরা ২৫ একর জমিতে 'বিদেশী'দের জন্য তৈরি হয়েছে ১৭টি বড় বড় বিল্ডিং। এর মধ্যে ২টি হচ্ছে মহিলাদের জন্য। প্রতিটি বিল্ডিং-এ থাকছে অন্তত ২০০ জনকে রাখার ব্যবস্থা। ১২০টি বাথরুম ও টয়লেট তৈরি করা হচ্ছে আলাদা ভাবে। বন্দিশালার ভিতরে প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাসপাতাল, বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকছে।
সঙ্গে থাকবে কারা-কর্তাদের আবাসনও। সর্বত্রই থাকছে সিসিটিভির নজরদারি। অসম পুলিশের হাউজিং ডিপার্টমেন্টের তদারকিতে তৈরি হচ্ছে এই বিশাল বন্দিশালা। অসমে বর্তমানে ছ'টি ডিটেনশন ক্যাম্প বা ডি-ক্যাম্প রয়েছে। ছ'টিই কোনও না কোনও জেলখানাকে ক্যাম্পের রূপ দেওয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থদের ডি-ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের বিচারে 'বিদেশি'রা বেশিরভাগই ভারতীয়। এমনটাই দাবি করেন, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতি (সিআরপিসিসি)-র কো-চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থ।
তাঁর মতে, 'গরীব মানুষ নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে অনেক সময় ব্যর্থ হন। এছাড়াও আদালতের চিঠি ঠিক মতো তাঁরা না পেলেও এক তরফা ভাবে রায় হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। অসামের ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে বাঙালিরাই বেশি ব্যর্থ হয়েছে নাগরিকত্ব প্রমাণে।'
Soujan Mondal